চট্টগ্রাম, বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর, ২০২৩

Porisor banner

চবির আইসিটি সেল : প্রযুক্তির ছোঁয়ায় লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কমছে

রাকিব

পরিসর.কম

প্রকাশিত : ১০:০১ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ১০:৫২ এএম, ১৫ জুলাই ২০১৯ সোমবার

চবির আইসিটি সেল  : প্রযুক্তির ছোঁয়ায় লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কমছে

চবির আইসিটি সেল : প্রযুক্তির ছোঁয়ায় লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কমছে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বারের মত সম্পূর্ণ নিজস্ব অটোমেশন সিস্টেমে অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮-১৯ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা। আইসিটি সেল এর সঠিক তদারকির মাধ্যমে পাঁচ কোটি টাকার স্থানীয় সেটআপের বদলে প্রায় ১লাখ টাকার নিরাপদ ক্লাউড সার্ভারের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি,২০১৮-২০১৯ সালে ব্যবহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিস্টেমটি অন্য যেকোন সিস্টেমের চেয়ে এগিয়ে এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং নির্ভর করে শিক্ষা উপকরণ, গবেষণা, গবেষণা পত্রের সাইটেশন,মানসম্মত ওয়েবসাইট ইত্যাদির উপরে।চবির পূর্বের এলোমেলো ওয়েবসাইটটির কার্যক্রম বন্ধ করে একটি আধুনিক, আকর্ষণীয় এবং তথ্যসমৃদ্ধ ওয়েব পোর্টাল চালু করে এই সেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের যাবতীয় তথ্যাবলী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পোর্টালে সংরক্ষিত আছে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে তথ্য পরিবর্তন এবং সংশোধন করতে পারবে। এর ফলে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের যুগে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে সক্ষমতা লাভ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববদ্যালয় । আন্তর্জাতিক মানের আধুনিকায়নকৃত এই পোর্টালের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ, ইনস্টিটিউট, গবেষণা কেন্দ্র, হল এবং অফিসসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের তথ্য হালনাগাদ থাকবে। পূবের্র ওয়েব সাইটের তুলনায় এই ওয়েব পোর্টাল অধিকতর দ্রুত গতি সম্পন্ন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক কাজ দ্রুত এবং গতিশীল করণের লক্ষ্যে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ৩০৮ মেগাবিট/সেকেন্ড থেকে ৭৫৮ মেগাবিট/সেকেন্ডে উন্নীত করেছে সেল কর্তৃপক্ষ । এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভিত্তিক কাজ সমূহের গতি যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে।

আইসিটি সেলের কার্যক্রম,চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিচালক ড. মোঃ হানিফ সিদ্দিকী পরিসরকে বলেন, আমাদের ভালো লাগার ব্যাপারটা বাঁধ ভাঙ্গা। আমরা প্রথমবারের মত নিজস্ব অটোমেশন সিস্টেমে অনুষ্ঠিত ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সকল প্রকার কার্যক্রম ঝামেলাবিহীন ভাবে সম্পূর্ণ করি । আইসিটি সেলের অধীনে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আধুনিক, আকর্ষণীয় এবং তথ্যসমৃদ্ধ ওয়েব পোর্টাল চালু এবং ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ বর্ধিতকরণ করার কাজ শেষ করি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক জটিলতা ও কমছে। কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতি এবং আইসিটি সেলের সহকর্মী,কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি যারা বিনা বাক্য দিনরাত সমান করে কাজ করে যাচ্ছেন । আমাদের লক্ষ্য এবং স্বপ্ন সুবিশাল এবং বাস্তবিক। দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য আইসিটি সেল এর অধীনে ৭ টি যুগোপযোগী আইসিটি কোর্স চালু করতে যাচ্ছি আমরা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ, ইনস্টিটিউট, গবেষণা কেন্দ্র, লাইব্রেরি, মিউজিয়াম এবং অফিসসমুহের যাবতীয় কম্পিউটার এবং আইটি সম্পর্কিত হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমাদের সেল এর অধীনে নিজস্ব হার্ডওয়্যার সার্ভিসের চালু করার প্রয়াস রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অফিসের সেবা ডিজিটাল করা অত্যন্ত জরুরী । এতে ই-ফাইলিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। ইলেকট্রনিক নোটিং, ফাইলিং ও ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর ব্যবহারের মাধ্যমে সকল অফিসে পর্যায়ক্রমে ইলেকট্রনিক পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের । ইলেকট্রনিক নথি ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মান অনুসরণ করা এবং মেটাডাটা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে । যার ফলাফল হিসেবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পৌছে যাবে কাগজবিহীন বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারপ্রান্তে।

আইসিটি সেলের কার্যক্রম এবং ফলাফল সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ( রুটিন দায়িত্ব) ড. শিরীণ আখতার পরিসরকে বলেন, আইসিটি সেলের মাধ্যমে আমাদের অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক কষ্ট দুটোই লাঘব হচ্ছে। সেলে দায়িত্বরত সবাই খুবই উদ্যমী। আইসিটি সেলের পরিপূর্ণ সহয়াতায় ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের স্বপ্নের ক্যাম্পাস । আইসিটি সেলের কার্যক্রমে আমি অনেক আশাবাদী। তথ্য ও প্রযুক্তিগত ভাবে আইসিটি সেল চবিকে অন্য উচ্চতায় পৌছে দিতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।