চবি’র জীববৈচিত্র্যে ৩ দশকে বেড়েছে ৩৪৯ প্রজাতি
পরিসর- গ্রুপ-৫
পরিসর.কম
প্রকাশিত : ০১:৪৮ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০১:৫৬ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০১৮ বুধবার

চবি’র জীববৈচিত্র্যে ৩ দশকে বেড়েছে ৩৪৯ প্রজাতি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীববৈচিত্র্যকে আরও সমৃদ্ধ করে গত তিনদশকে বেড়েছে ৩৪৯টি প্রজাতি। এর মধ্যে ১৫৬ প্রজাতির পাখি ও ১৯৩ প্রজাতির বৃক্ষ রয়েছে। তবে কিছু বন্যপ্রাণি বিলুপ্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৯৮৫ সালে চবি ক্যাম্পাসে পাখি ছিল ৭৯ প্রজাতির। বর্তমানে পাখি রয়েছে ২১৫ প্রজাতির। এছাড়া ১৯৯৯ সালের হিসাবে ক্যাম্পাসে বৃক্ষ ছিল ৫৯ প্রজাতির, যা বর্তমানে বেড়ে ২৫২ প্রজাতিতে দাঁড়িয়েছে। তবে এই সময়ের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে তিন প্রজাতির বানর, চিতা বাঘ, গোরখুদিনী, বন্য কুকুর, উল্লুক, হনুমানসহ আরও কিছু প্রাণি। বিশ^বিদ্যালয়ের বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো হরিণের সংখ্যাও কমেছে ব্যাপক হারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগ থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়। জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ক্যাম্পাসে পাখির অবস্থান ও সংখ্যা অনুসন্ধানে এই বিভাগের উদ্যোগে এ পর্যন্ত চারটি জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। ১৯৮৫ সালে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক গাজী সৈয়দ মোহাম্মদ আসমত ও অধ্যাপক বেনজির আহমেদ ও চট্টগ্রাম বন গবেষণা ইন্সটিটিউটের তৎকালীন পরিচালক মোখলেসুর রহমানকে সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পাখিদের ওপর জরিপ চালান। এতে ক্যাম্পাসে বসবাসকারী ৭৯ প্রজাতির পাখি রেকর্ড করা হয়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো.ফরিদ আহসান ও বিভাগটির কয়েকজন শিক্ষার্থীও উদ্যোগে পাখিদের ওপর চালানো জরিপের ফল প্রকাশিত হয় ভারতের থ্রেটেন্ড ট্রেক্সা জার্নালে। এ জরিপে পাওয়া তথ্য মতে, ক্যাম্পাসে ৬২ টি গোত্রের মোট ২১৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে বলে রেকর্ড করা হয়। ২১৫ প্রজাতির পাখির মধ্যে ১০৮টি গায়ক ও ১০৭টি অগায়ক পাখি রয়েছে। পাখিগুলোর মধ্যে ১৬০টি প্রজাতির পাখির স্থায়ী নিবাসই চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ৫১টি অতিথি পাখি হিসেবে মৌসুমে ক্যাম্পাসে আসে আবার চলে যায়। চারটি প্রজাতির পাখি রয়েছে যারা মাঝে মধ্যেই আসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে কিছু দুর্লভ প্রজাতির পাখি। মথুয়া, পিটা, গ্রিন ম্যাগপাই, কানাকুয়া, মালকোহা, রেড হেডেড ট্রাগল, রুপাস নেকড লাফিং প্রাস এমনই কিছু দুর্লভ পাখি ক্যাম্পাসের বন-বাঁদারে উড়ে বেড়ায়।
ক্যাম্পাসে কখনো কখনো দেখা মিলে হরিণের। এছাড়া বানর, বন্য শূকর, সজারু, খরগোশ, কাঠ বিড়াল, কাছিম, বাঁদুর, কুকুর, বনমোরগ এবং বহু প্রজাতির সাপ ও ব্যাঙ প্রায়ই দেখা যায়। ক্যাম্পাসে ছয়টি শ্রেণির ৯৯টি পরিবার এবং ২১১টি গণের অন্তর্ভুক্ত ৩১৯ প্রজাতির বন্যপ্রাণির দেখা মেলে। এ ছাড়া কীট-পতঙ্গের সংখ্যা রেকর্ডকৃত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গাজী সৈয়দ মোহাম্মদ আসমত পরিসর.কম-কে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত তিন দশকে পাখির প্রজাতি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৫৬টি। এলাকাবাসী জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন বলে তিনি জানান।
গাজী সৈয়দ মোহাম্মদ আসমত আরও বলেন, ৭০ এর দশকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বানর, চিতা বাঘ, গোরখুদিনী, বন্য কুকুর, উল্লুক, হনুমান ছিল। তবে জনবসতি বাড়ার কারণে এসব প্রাণী ক্যাম্পাস থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া হরিণের সংখ্যাও কমেছে। তবে সামগ্রিক বিবেচনায় গত কয়েক দশকের তুলনায় বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীববৈচিত্র্যে অনেক বেশি সমৃদ্ধ।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. ফরিদ আহসান পরিসর.কম-কে বলেন, আমরা ১৯৯৭ থেকে ৯৯ পর্যন্ত গবেষণা করে ৯২ প্রজাতির পাখি পেয়েছিলাম ক্যাম্পাসে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে ২১৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ এবং বন ও পরিবেশ বিদ্যা ইনস্টিটিউট বৃক্ষরোপণ করায় পাখির প্রজাতি বেড়েছে।
২০১০ সালে বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামাল হোসাইনের এক গবেষণা হতে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১৩৬টি পরিবার এবং ৫১২টি গণের অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৮৩৫ প্রজাতির সপুষ্পক উদ্ভিদের উপস্থিতি ছিল।
২০১৬ সালে বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামাল হোসাইন, মোহাম্মদ সফিউল আলম ও মো. আকতার হোসেনের করা এক গবেষণা হতে জানা যায়, বর্তমানে ক্যাম্পাসে ১৩৬টি পরিবার এবং ৫১২টি গণের অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৮৮৫ প্রজাতির সপুষ্পক উদ্ভিদের উপস্থিতি রয়েছে। এই ৮৮৫ প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে ৩৯৬টি বীরুৎ, ১৭৪টি গুল্ম, ৭৮টি আরোহী এবং ২৩৭টি বৃক্ষ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রায় ১৩৪ প্রজাতির ঔষধি, ৫৫ প্রজাতির কাঠ উৎপাদনকারী, ৫৩ প্রজাতির শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ রয়েছে। ক্যাম্পাসের আবাসিক বাসা-বাড়িগুলোতে প্রায় ৩০ প্রজাতির ফল প্রদানকারী উদ্ভিদের চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে ২৮ প্রজাতির সবজি উৎপাদনকারী উদ্ভিদ রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে ৪৪ প্রজাতির অর্কিড, ৫২ প্রজাতির ফার্ন এবং ৪৭ প্রজাতির শৈবাল।
বন ও পরিবেশ বিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামাল হোসাইন পরিসর.কম-কে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য অনেক বেশি সমৃদ্ধ হয়েছে। ১৯৯৯ সালে ক্যাম্পাসে ৫৯ প্রজাতির বৃক্ষ ছিল, ২০০৬ সালে ছিল ১৭৫ প্রজাতির বৃক্ষ। বর্তমানে ক্যাম্পাসে ২৫২ প্রজাতির বৃক্ষ রয়েছে। পরিকল্পনা করে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ এবং বন ও পরিবেশ বিদ্যা ইনস্টিটিউটের বৃক্ষরোপণ ও স্থানীয়দের বৃক্ষরোপণ করার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ নিয়ে পরিসর.কম-এর কথা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গেও। তিনি বলেন, প্রকৃতির এক স্বগরাজ্য এই বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসের জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ করতে বন ও পরিবেশ বিদ্যা ইনস্টিটিউট ও উদ্ভিদবিদ্যা কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য আরও বেশি সমৃদ্ধ হবে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, শিক্ষার পাশাপাশি পর্যটনের ক্ষেত্রেও এটি অনবদ্য স্থান হয়ে উঠবে।
পরিসর/গ্রুপ-৫/গ্রুপ-২
[গ্রুপ-২: সাইফুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মিরাজুল ইসলাম, আশিকা আফরিন, শাহাদাত হোসাইন, আবুল হায়াত, মোমেন উদ্দিন]
- চবির আইসিটি সেল : প্রযুক্তির ছোঁয়ায় লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কমছে
- সাংবাদিক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি
- Nazrul’s 120th birth anniversary celebrated at CU
- Video Game Violence
- চবিতে বসেছে আলোর মেলা!!!
- ২০১৮ সালে ১৯৬৪২ টি অগ্নিকান্ডে ক্ষতি ৩৮৬ কোটি টাকা
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কফি হাউজ
- অর্থায়নে পিএইচপি ফ্যামিলি
চবি সাংবাদিকতায় নতুন স্টুডিও - চবির সাংবাদিকতা বিভাগের বিদায়ী সংবর্ধনা রোববার
- 85.7% students satisfied with CAJCU
- ডয়েচে ভেলের উদ্যোগে ‘মোবাইল জার্নালিজম’ শীর্ষক কর্মশালায় অংশগ্রহণ
- চবিতে ডিজিটাল সাংবাদিকতা বিষয়ক নেটওয়ার্কিং সম্মেলন অনুষ্ঠিত
- গণমাধ্যম বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন
ইতিহাস গড়লো চবি - ৫২ বছরে মাত্র চার সমাবর্তন চবি-তে!
- ঝর্ণা-ফোয়ারায় সৌন্দর্য বাড়ছে চবি’র
- চবি শিক্ষার্থীদের দুঃখ রাতের শাটল ট্রেন
- চবি’র জীববৈচিত্র্যে ৩ দশকে বেড়েছে ৩৪৯ প্রজাতি
- CUCSU becomes functional again, desire all
- প্রথমবারের মতো নিজস্ব অটোমেশন
চবিতে ভর্তি পরীক্ষা ২৭-৩১ অক্টোবর - গণতন্ত্র ও জাতীয় উন্নয়নে মুক্ত সাংবাদিকতা অপরিহার্য
- কাজ করো, ফল তোমাদের পিছনে দৌঁড়াবে: উপাচার্য
- চবির সম্মৃদ্ধ লাইব্রেরি, তবুও বিমুখ শিক্ষার্থীরা!
- নতুন পরিসর-এ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা
- হার না মানা শিলা